সানিউর রহমান: অনলাইন এক্টিভিস্ট না নাগরিক কি হিসেবে দেখা উচিত?

08/03/2013 20:35

মিরপুর পল্লবীতে প্রকৌশলী সানিউর রহমান নামক এক যুবক দুর্বৃত্তদের চাপাতির কোপে আহত হয়েছেন। প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে তার ওপর হামলা হয়েছিল। ঘটনাক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। কয়েকটি জায়গায় দেখলাম তিনি নিজেকে ব্লগার এবং শাহবাগ গণজাগরণ আন্দোলনের সাথে জড়িত বলে দাবি করেছেন। একজন ব্লগার হিসেবে তার সম্পর্কে আগ্রহ বেড়েছে তবে পরবর্তীতে বলেছেন তিনি ব্লগিং করেন না শুধুমাত্র ফেসবুকে লেখালেখি ছাড়া। অনলাইন এক্টিভিস্ট কিংবা ব্লগার যেই হোক না কেন আততায়ী হামলার মাধ্যমে তার নাগরিক অধিকার তথা বেঁচে থাকার অধিকারকে খর্ব করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে লক্ষাধিক ব্লগার আছেন। আছেন তারচেয়েও কয়কগুণ বেশী অনলাইন এক্টিভিস্ট। অলাইন বিশেষত ফেসবুক মানুষের হাতের মুঠোয় আসার পর অনেকেই ফেসবুকের দিকে ঝুকুছে। এই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে মানুষ তার নিজের অভিব্যক্তি এবং মতামত প্রকাশ করে যাচ্ছে কোনরূপ প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই। গড়ে ওঠছে নিজস্ব একটা সার্কেল। এর মাধ্যমে ভাব-মতের আদানপ্রদান হচ্ছে। মুক্তমনে মানুষ লিখে যাচ্ছে নিজস্ব ভাবনাসমূহ।  ফলে ব্যক্তিক ভাবনাসমূহ ছড়িয়ে পড়ছে সবখানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

সানিউর রহমান আহত হবার পর সবার একটাই প্রশ্ন ছিল তিনি কি ব্লগার? কেন তিনি দুর্বৃত্ত কর্তৃক আক্রমণের শিকার হলেন? কিছু অনলাইন পত্রিকা, নিউজ চ্যানেল এবং জাতীয় পত্রিকা লিখেছে সানিউর দাবি করেছেন তিনি ব্লগার এবং শাহবাগ আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট। ব্লগার প্রশ্নে আমার অভিমত তিনি ব্লগার ছিলেন বলে জানি না কারণ এই দেশে লক্ষাধিক ব্লগার আছেন যারা নিয়মিত ব্লগিং করেন। তাদের সবাইকে চেনা সম্ভব না। অনেকেই নিজস্ব সার্কেল তথা কোন নির্দিষ্ট ব্লগে ব্লগিং করলে সবাইকে চেনা সম্ভব হয়ে ওঠে না কিছু ব্যতিক্রম বাদে। এই যেমন আমি নিজেও ব্লগার। প্রায় পাঁচ বছর সময় ধরে ব্লগিং করছি। কিন্তু সবাই আমাকে চেনে না এবং চেনা সম্ভবও না। হয়ত নিজস্ব সার্কেল এবং এর বাইরে কিছু ব্লগার সেভাবে হয়ত বলতে পারবে আমার ব্লগিংয়ের ধরণ। এটাই সহজাত!  তবে সানিউর সম্পর্কে যা জানি, তিনি ফেসবুক ইউজার কিংবা এক্টিভিস্ট ছিলেন। ফেসবুকে তার একাউন্ট ছিল এবং তিনি সেখানে নিয়মিত লিখতেন। তাই প্রোফাইল বিশ্লেষণ করে দেখা যায় তিনি মুক্তমতের অধিকারী ছিলেন! মুক্তমত আর বিশ্বাস এখানে ভিন্ন বিষয় হিসেবেই এখানে আমি উল্লেখ করছি।

উল্লেখযোগ্যভাবে একটি প্রশ্ন, সানিউর আহত হবার পর কেন তিনি নিজেকে ব্লগার হিসেবে দাবি করেছেন অথবা মিডিয়ায় প্রকাশ হয়েছে এবং  তিনি ব্লগার কি-না সে বিষয়ে অনেকেই প্রশ্ন করছে? উত্তর খুব সহজ- বর্তমান সময়ে তরুণ প্রজন্মের কেউ আহত-আক্রান্ত হলে সবাই সে ঘটনার হদিস বের করতে সহজ পন্থাটাই বেছে নিচ্ছে যে ব্লগার কিংবা অনলাইন এক্টিভিস্ট হলে আক্রমণকারীদের সন্ধান পাবার পথ সোজা! দেশের চিহ্নিত একটা গোষ্ঠী বর্তমানে ব্লগার এবং অনলাইন এক্টিভিস্টদের বিরুদ্ধে অলিখিতভাবে এবং ক্ষেত্রবিশেষে ঘোষণা দিয়েই যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তাদের কাছে বর্তমানে একটাই শত্রু এবং তা হল ব্লগার এবং অনলাইন এক্টিভিস্ট। কারণ এই তরুণেরা দেশ স্বাধীন হবার দীর্ঘ ৪২ বছর পর এই প্রথম প্রকাশ্যে রাজপথে নেমে এসেছে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত দল জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে। এই গণদাবী ব্লগার এবং অনলাইন এক্টিভিস্টদের মাঝ থেকে শুরু হলে ক্রমে গণদাবিতে পরিণত হয়েছে।

শুরুটা যুদ্ধাপরাধী কসাই কাদের ওরফে কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন রায় দেবার পর পাঁচ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ থেকে। রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমেছিল কয়েকজন ব্লগার শাহবাগে। সময়ের সাথে সাথে মানুষ বাড়ে। এ দাবিটি যে প্রকৃতই গণদাবি তা প্রমাণ হয় কয়েক ঘন্টার মধ্যেই। শাহবাগ আন্দোলন জনগণের আন্দোলনের পরিণত হয় এবং সব শ্রেণী-পেশার মানুষ এসে এসে মিলিত হয়। সব আন্দোলন এবং কর্মসুচি হয়ত কিছু মানুষের মাঝ থেকে শুরু হয় কিন্তু তা কালক্রমে সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। এখানে সানিউর হয়ত নিজের উপস্থিতি জানান দিয়েছিলেন, হয়ত প্রতিদিনের কর্মসুচির মাঝে তার সর্বাত্মক অংশগ্রহণ ছিল কিন্তু সংগঠক কি-না তার প্রমাণ দেবে যারা এর সাথে জড়িয়ে প্রথম থেকে কেবল তারাই! এখানে কেউ আহত হলে কিংবা আক্রমণের শিকার হলে তিনি গণজাগরণ মঞ্চের সাথে জড়িত বলে চালিয়ে দেয়া উচিত হবে না। কারণ একটা চিহ্নিত গোষ্ঠী ইতোমধ্যেই গণজাগরণ মঞ্চের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সাধারণ অর্থেই নাস্তিক কিংবা ইসলামবিরোধী আখ্যা দেবার চেষ্টা করে যাচ্ছে।

আমাদের মনে রাখা উচিত গণজাগরণ মঞ্চ গড়ে ওঠেছে রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে। স্বাভাবিকভাবেই এর সাথে যুক্ত হয়েছে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত দল জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার দাবি। সব মত-পথের মানুষের মিলন হয়েছে কেবলমাত্র এই দুই দাবিকে কেন্দ্র করে। এখানে কে মুসলিম, কে হিন্দু, কে বৌদ্ধ, কে খ্রিষ্ট্রান কিংবা অন্যান্য তার হিসেব মেলানো হয় নি।  এখানে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামাত-শিবির ছাড়া সব দলের জন্যে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে দায়ী দল জামাত-শিবির ছাড়া অন্য কোন দলের হরতালকে প্রতিরোধের আহ্বান জানানো হয়নি। তাই বিএনপি’র ডাকা হরতাল নিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের কোন বক্তব্য ছিল না এবং ছিল না প্রতিরোধের ডাক। একটি দল হিসেবে তাদের কর্মসূচিকে গণজাগরণ মঞ্চ স্বাভাবিকভাবেই দেখেছে। এটাই প্রমাণ করে গণজাগরণ মঞ্চের নির্ভেজাল নিরপেক্ষ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি।

বাংলাদেশে বর্তমানে সবচেয়ে আশঙ্কাজনক ব্যাপার হল কিছু পত্রিকার হলুদ সাংবাদিকতা। এর নেতৃত্বে আছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। দেশে ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্টদের নামে কুৎসা রটনা, আস্তিক-নাস্তিক বিভেদ সৃষ্টি করে মানুষের মাঝে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে এই পত্রিকাটি মরিয়া হয়ে ওঠেছে। মানুষের ইসলামী মূল্যবোধকে উপলক্ষ করে পত্রিকাটি ইতোমধ্যেই দেশে একটা বিভেদের চেষ্টা করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে যে তারা সফল হয় নি তা বলা যাবে না। তবে আস্তে আস্তে মানুষের মাঝে  সচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে। আমার দেশ পত্রিকার ভুয়া এবং হলুদ রিপোর্টের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই একবার শুক্রবার জুম্মাহর নামাজের পর সারাদেশে তাণ্ডব চালিয়েছে ইসলামী দলের আড়ালে থাকা জামাত-শিবির। পবিত্র বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে নামাজের পর পরই কিছু ধর্মান্ধ কর্তৃক পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষিপ্ত হয়েছে। সিলেট, ফেণী, নাটোরসহ কয়েক জায়গায় শহীদ মিনার ভাংচুর হয়েছে। পতাকা ছিড়েছে তারা উন্মত্ত্বতায়। এটা পরিষ্কারভাবেই দেশবিরোধী কার্যকলাপ হলেও আমার দেশ পত্রিকা এবং সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিষয়টি অতীব আশ্চর্যের হলেই কঠিন এক বাস্তবতা এবং সত্য।

সানিউর রহমান আক্রান্ত হয়েছেন ৭মার্চ এবং সাথে সাথে অনলাইনে এবং কিছু পত্রিকার বিশেষ করে অনলাইন ভার্সনে তিনি ব্লগার এবং গণজাগরণ মঞ্চের সাথে জড়িত ছিলেন বলেও সংবাদ বেরিয়েছিল। বিষয়টি ছিল একপেশে এবং মিডিয়া পরবর্তীতে তাদের খবরকে প্রত্যাহার করেছে অনুমান করা যায় প্রিন্টেড ভার্সনে না আসায়। এটা ইতিবাচক! তবে খেয়াল রাখা উচিত কিছু মিডিয়া বিশেষ করে আমার দেশ গং যেভাবে হলুদ সাংবাদিকতার মিশনে নেমেছে তাতে করে তাদের হাতে অপপ্রচারের একটা ইস্যু তুলে দেয়া হচ্ছে কি-না!

শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের সাথে সংশ্লিষ্ট যারা তারা বিশেষ করে ইমরান এইচ সরকার এবং আরিফ জেবতিক একটা বিষয়ে ধন্যবাদ পেতেই পারেন কারণ সানিউর আহত হবার পর তারা ব্যক্তিগতভাবেই বিষয়টির নিয়ে কাজ করেছেন। ফলে অনেকেই যারা ওঁত পেতে ছিল অপপ্রচারের জন্যে তারা প্রথম রাতেই ব্যর্থ হয়ে গেছে। বিষয়টি ইতিবাচক যে, এই প্রজন্ম শুধুমাত্র আন্দোলনের ডাক দিয়ে রাস্তায় শ্লোগান দিয়েই দায় সারে হয় না। তারা যে কোন পরিস্থিতিতে যে কোন বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্ভূত যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবেলাও করতে জানে। ফলে আবারো অপপ্রচারের হাত থেকে রেহাই পেল গণজাগরণ মঞ্চ। কিছু হলুদ মিডিয়া পায় নি তেমনভাবে অপপ্রচারের কোন ইস্যু!

সানিউর রহমান ব্যক্তিগত জীবনে একজন প্রকৌশলী। তিনি ফেসবুকে একটিভ ছিলেন বলে জেনেছি। তার ফেসবুক নিক ছিল “নাস্তিক নবী”। নিক নেয়ার সম্পূর্ণ ইচ্ছা এবং সুযোগ ব্যবহারকারীর। তিনি তার ইচ্ছেতেই নিক নিয়েছেন এবং সেভাবে ব্যবহার করছেন। এখানে বলার কিছু নেই। কিন্তু এই নিক নেম আমার দেশ গং মিডিয়ার অপপ্রচারের একটা উপলক্ষ। কারণ শাহবাগ আন্দোলন শুরু হবার পর সব ব্লগার এবং অনলাইন এক্টিভিস্ট তাদের কাছে সাধারণভাবেই নাস্তিক এবং ইসলামবিদ্বেষী। এমন একটা নিক তাদের কাছে পোয়াবারো! বিশ্বাসের দিক থেকে তিনি যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন! এমনকি তিনি ধর্ম-কর্ম পালন করলেও তারা তাদের কাছে একই ধারণার মানুষ তথা নাস্তিক, মুরতাদ, কাফের ও ইসলামবিদ্বেষী- বিষয়টি দূর্ভাগ্যজনক হলেও প্রমাণিত সত্য!

সানিউরের ফেসবুক প্রোফাইল অনুসন্ধান করে দেখা গেছে গত ২ মার্চ ১৩ তিনি ফেসবুকে একটি পোষ্ট করেছিলেন তার ওপর হামলার আশঙ্কার বিষয়ে।  তিনি লিখেন- গত কয়েকদিন ধরে আমকে কিছু অপরিচিত ছাগু চেহারা বারবার ফলো করছে। কিছু বলে না,আক্রমনও করেনা। কিন্তু তাদের চেহারার ভাবভঙ্গি খুবই আক্রমনাত্মক। তারা হুমকি দেইনি কিন্তু ফেইসবুকেতো হুমকির অভাব নেই। কেন এমন মানসিক চাপ আমাকে সয্য করতে হচ্ছে। আমি নাস্তিক ঠিকই, কিন্তু আমিতো কখনো মুসলিমদের জায়নামাজ পড়ায়নি,কোরানের একটি পাতাও ছিড়িনি,কোনো হিন্দু বাড়ি অথবা মন্দিরে আগুন দেইনি,কালেমা লেখা কোনো মুসলিমদেশের পতাকা ছিড়িনি। তবে আমাকে মেরেফেলার এতো হুমকি কেনো? আমি সত্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করি, এটা যদি কারো ভুল বিশ্বাসের বিপরীতে যায়,তাতে আমারতো কিছু করার নেই।  ৩ মার্চ লিখেছিলেন, এটা আমার শেষ পোস্ট হতে পারে,আমার মৃত্যুর সম্ভবনা বেড়েই চলেছে। আমি বীরপুরুষ নই বলে মনেহচ্ছে,নিজেকে খুব একা এবং দুর্বল বলে মনে হচ্ছে। আমি সাড়ে ১০টার দিকে ঔষধ কিনতে বিল্ডিং এর নিচে নামলাম,ঠিক তখনি একজন নিল রঙের পাঞ্জাবি তুপি পরা লোক আমার পাশে এসে কানের কাছে বললো "জবাই হবার জন্য প্রস্তুত থাক নাস্তিক নবী"। একথা বলেই লোকটি দ্রুত সামনের দিকে হেটে চলে গেলো। আমি কি করবো বুজতে না পেরে ঔষধ না কিনেই দ্রুত বিল্ডিং এ ফিরে এলাম। আমি বুজতে পারছি আমার জীবনের নিরাপত্তা কেউ দিবেনা,মৃত্যুতে আমার কোনো দুঃখ নেই,দুঃখ এতুটুকুই যে মৃত্যুর পর এই সুন্দর পৃথিবীতে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই   এটা দুর্ভাগ্যজনক স্বদেশে এমন করে আশঙ্কায় দিনযাপন করতে হচ্ছে অনেককেই।

সানিউর রহমান ব্লগার কিংবা অনলাইন এক্টিভিস্ট যা-ই হোন না কেন তিনি স্বাধীন দেশের একজন নাগরিক এবং নিরাপদে বেঁচে থাকার অধিকার তিনি রাখেন। তাকে হুমকি কিংবা আহত করা নাগরিকের বেঁচে থাকার অধিকারের প্রতি সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

শাহবাগ আন্দোলনের সাথে সারা দেশের মানুষ জড়িত হয়ে গেছে। কেউ যদি অক্ষত অথবা আহত হয়েও দাবি করে তিনি শাহবাগ আন্দোলনের সাথে জড়িত তবে হয়ত খুব বেশী বলা হবে না। জনমানুষ যেখানে জড়িত সেখানে এর কৃতিত্বও তাদের। তবে খেয়াল রাখা উচিত জড়িত থাকা কিংবা একাত্মতা প্রকাশ করা মানেই সংগঠক না। সংগঠকদের অনেক দায়িত্ব নিতে হয়। এবং সবাই এই দায়িত্ব নেবার সুযোগ কিংবা অধিকার রাখেও না। তাই সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সানিউর রহমানের উক্তি তাকে সংগঠক হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না এবং তার ব্যক্তিক কার্যকলাপের দায়ও শাহবাগ আন্দোলন নেবে না বলেই আমার ধারণা।

ঘটনার পরের দিন আহত সানিউর টিভি ক্যামেরায় বলেছেন তিনি ব্লগার নন; অনলাইন এক্টিভিস্ট! এবং ফেসবুকে জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে এবং গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষে লিখতেন। সানিউর রহমান অনলাইন এক্টিভিস্ট কিংবা ফেসবুকার যেই পরিচয় দিন না কেন তার সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। একজন নাগরিক হিসেবে তিনি পুর্ণ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বসবাস করার অধিকার রাখেন। যারা তাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছে তাদেরকে খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা খুব জরুরি। তা না হলে আমার মা, আমার দেশের ওপর যে সব শকুন তাদের শ্যেণদৃষ্টি দিয়ে রেখেছে তাদেরকে প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে যাবে। 

Back

Search site

একটি ব্যক্তিগত ব্লগ। সব দায় এবং দায়িত্ব লেখকের একান্ত নিজস্ব।