কেন বলছি শুভ ব্লগিং রাউন্ড দ্যা ক্লক!

 

প্রশ্ন একটা ঘুরপাক খায় কেন বলছি শুভ ব্লগিং রাউন্ড দ্যা ক্লক! উত্তরটাও সাথে সাথে নিজের কাছ থেকেই উঠে আসছে আসলে সুস্থ আর সুন্দর ব্লগিং আশা করছি বলেই এমনটা বলা হয়ে যায়। কখনো নিজের অজান্তে অথবা ঠিক ঠিক ঠান্ডা মাথায়!
 
কেন ব্লগে আসা? এ প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে জানা নাই। মনে পড়ছে ফেসবুকে ফেসবুকিং করতে করতে হঠাত কোন একদিন কোন একজনের লিংক ধরেই ব্লগে রেজিঃ করা। আমার ঠিক মনে পড়ছে না আমি প্রথমে কোন ব্লগে ব্লগিং শুরু করেছিলাম। হতে পারে তা সামু অথবা প্রথম আলোব্লগ। তারপর ব্লগিংয়ের মজা পেয়ে যাওয়া এবং গত একবছরের বেশি সময় ধরে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ব্লগিং!
 
আমি যখন ব্লগে আসি তখন জানতামই না ব্লগিং কাকে বলে। না জেনে বুঝে ব্লগে আসা। তারপর সময়ের সাথে সাথে ব্লগের সাথে মিশে গেছি। বোকাদের মতোই ভাবতাম নিজের নামের বদলে অন্য নাম (নিক) নেয়ার রহস্য কী! যদি জানতাম তাহলে হয়তো আমারো নিকও হতো এমন কোন রহস্যময়তা ঘেরা! না জেনে ব্লগিংয়ে আসা বলে নিকের নাম দিয়েই যাত্রা।
 
আমু,সামু,সচল,নাগরিক,চতুমার্ত্রিক, প্রথম আলোব্লগ,এক্সপি ব্লগ, মুক্তব্লগ,ওপেস্ট, লোটা-কম্বল সহ আরো কয়েকটা ব্লগে আমার নামেই রেজিঃ আছে কিন্তু কেন জানি সবগুলোতে যাওয়া হয়ে উঠেনা। এটা হতে পারে আমার অনেকগুলো ব্যর্থতার আরেকটা পাঠ। আমি সবগুলোতে রেজিঃ করে রেখেছি আমার নিক যেন আর কেউ না নিতে পারে তার জন্যে। যেহেতু এ নামেই আমার লেখালেখি সেই হিসেবে এ নিকটা আমি আমার নিজস্ব করে রাখতে চাইছি।
 
আমার এক বন্ধু একদিন আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলো কি লাভ তোর ব্লগিংয়ে? আমি তাকে উত্তর করেছিলাম কোন লাভ নাই, সময় কাটাই! সে তাচ্ছিল্যের হাসি হেসেছিলো। আমি তার তাচ্ছিল্যকে পাত্তা না দিয়ে বলেছিলাম, সত্যিই বলছি! তারপর একটা সময়ে অনুধাবন করি, ব্লগিংয়ের মাধ্যমে নিজের স্বাতন্ত্র্যকে আলাদাভাবে প্রকাশ করা যায়। তা হতে পারে ব্লগ লেখা অথবা অন্যের লেখার মগ্নপাঠ আর মন্তব্যের মাধ্যমে। তাই নিজেকে আলাদাভাবে গড়ে তোলার প্রয়াসে অন্যের লেখার বিশ্লেষণী পাঠে মনোযোগী হই প্রথমাবস্থায়! এতে করে নিজের ভেতরকার আলোচক-সমালোচক অস্থিত্বের প্রমাণ পাই। যা আমার নিজের জন্যেই সুখকর একটা ব্যাপার।
 
নিজের ভেতরকার লেখকসত্বার বিচ্ছুরণকে যদি প্রাধান্য দিই তবে আমাকে আমার সৃষ্টির দিকে মনোযোগি হতেই হয়। সেজন্যে আমি প্রথমেই ব্লগে নিজের লেখাগুলো সবার সামনে নিয়ে আসার প্র্যোজনীয়তা অনুভব করি। সেজন্যে আমি আমার কবিতা পোস্ট দিই। এতে করে উপস্থিত পাঠক ব্লগারদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াকে খুব উপভোগ করে থাকি। এর ফলে আমি একটা দিক বিশেষ করে পাঠকের অনুভূতি পড়তে পারলেও প্রিন্ট-মিডিয়ার প্রতি ক্রমে আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। আমি খেয়াল করে দেখেছি গত একবছরে আমি শুধুমাত্র কালি ও কলম ছাড়া আর কোথাও কোন লিখা দিইনি। অনেকগুলো লেখা প্রিন্টাকারে এসচছে যার অধিকাংশই পরিচিতজনদের আগ্রহ আর ভালোবাসায় প্রকাশ বলেই আমি মনে করছি। যা আমার নিজের জন্যে খুবই হতাশার!
 
যা বলছিলাম, কেন বলছি শুভ ব্লগিং রাউন্ড দ্যা ক্লক!ব্লগে এসে যাদের লেখাই পড়ছি আর বাক্যবিনিময় হচ্ছে যাদের সাথে তাদের অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে অপরিচিত কোনো এক (যদিও অনেকের সাথে ইতোমধ্যেই দেখা হয়েছে)! তাদের লেখা পড়ে নিজের মনের মাঝে তাদের একটা আলাদা অবয়ব দাড় করা হয়ে যায়। মানুষ কেমন তার একটা আলাদা চিন্তার সুযোগও হয়ে যায়। দেখা হলে মেলাবার চেষ্টায় প্রবৃত্ত হই। অনেক সময় মেলে কিন্তু অধিকাংশ সময়ই চিন্তা আর বাস্তবের সাথে মেলে না। এটাই মনে হয় ব্লগের একটা বিশেষ এবং উল্লেখযোগ্য দিক।
 
না দেখা অথবা ব্যক্তিগতভাবে অপরিচিতদের সাথে আমাদের কথোপকথনে যে দিকটা খুব বেশি খেয়ালযোগ্য তা হলো পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ। এ জিনিসটাকে আমি খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে থাকি। অনেকক্ষেত্রেই আমি আশাবাদের আলোরেখা দেখতে পাই কিন্তু বিপরিতক্ষেত্রে খারাপ লাগার একটা উপলক্ষ হাজির হয়!
 
যাকে দেখিনি অথবা যাকে দেখেছি খানিকের জন্যে যার সাথে পরিচয় হয়েছে ভার্চুয়াল জগতের মাধ্যমে তার সাথেকার ব্যবহারকে আমি প্রাধাণ্য দিই খুব বেশি করে। তাই শুভ ব্লগিং বাক্যটা আমার বুকে এসে বিঁধে ইতিবাচক অর্থে। আর ঘড়ির কাঁটার সাথে সাথে ব্লগের অস্থিত্বের জন্যেই এককথায় বলতে চাই শুভ ব্লগিং রাউন্ড দ্যা ক্লক!

Search site

একটি ব্যক্তিগত ব্লগ। সব দায় এবং দায়িত্ব লেখকের একান্ত নিজস্ব।